ঢাকা, ১৪ মার্চ: ১৪ মার্চ ঢাকায় ১৪ দলের সমাবেশে যোগদান না করার ঘোষণা ফেনীর লংমার্চেই দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ফেনীতে কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ৬ মার্চ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সমাবেশে আমরা যাচ্ছি না।”
তারপরও মহাজোটের অন্যতম শরিক দল হিসেবে যদি ডাকা হয়, তাহলে জাতীয় পার্টিকে যেতে হতে পারে- এমন পরিস্থিতি এড়াতে এরশাদ আগেভাগেই দেশ ছাড়েন।
পার্টিসূত্র জানায়, সোমবার রাতে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন তিনি। দেশে ফিরবেন আগামী ১৭ মার্চ। সমাবেশে যোগ দিতে প্রতিনিধি হিসেবেও কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাননি এরশাদ।
তার এ অনুপস্থিতি সমাবেশে যোগ না দেয়ার কারণ নয় বলে দাবি করেছেন পার্টির শীর্ষ নেতারা।
তাদের ভাষায়, সমাবেশে জাতীয় পার্টি যোগদান না করার সিদ্ধান্তটি এরশাদ সাহেব আগেই নিয়েছেন এবং ফেনীর লংমার্চে সাংবাদিকদের পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন।
তবে মহাজোটের অন্যতম শরিক দল হওয়া সত্ত্বেও কেন এ সমাবেশে দলটি যোগ দিচ্ছে না- এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
“জাতীয় পার্টি ও বিএনপি বিগত ২৯ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়ে ভারতের তোষামদি করেছে”- সম্প্রতি সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য ‘সঠিক নয়’ বলে এরশাদ মন্তব্য করেন। অবশ্য একইসঙ্গে সাফাই গেয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী এখানে আমাকে মিন করেননি (বুঝাননি)।আমি তো ওনার সঙ্গেই আছি।”
মহাসমাবেশে যোগ দিতে গত ৩ মার্চ এরশাদকে গণভবনেও ডেকেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঢাকা সিটি করপোরেশনের দু’টি মেয়র পদের একটি চেয়ে আবদার করে বসেন। এতে প্রধানমন্ত্রী কোনো সাড়া দেননি। পরে এরশাদও মহাসমাবেশে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু না বলে ফিরে আসেন।
মূলত মহাজোটের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করার পর থেকেই নানা বিষয়ে হিসাব মিলছে না জাতীয় পার্টির। এজন্য জোট ছেড়ে জীবনের শেষ নির্বাচনটি এককভাবেই করবেন বলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন এরশাদ।
সমাবেশে যোগ না দেয়ার পেছনে মূলত চারটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্টির একাধিক প্রেসিডিয়াম মেম্বার। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, জোট করার সময় এরশাদকে দেয়া প্রতিশ্রুতি না রাখা, এরশাদের মামলা প্রত্যাহার না করা, ডিসিসির একটি মেয়র পদ ছেড়ে না দেয়া এবং সর্বোপরি ভারতপ্রীতির কারণে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা দেশের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া।
১৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের এ সমাবেশ হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি থাকবেন। জাতীয় পার্টি আগে থেকেই এ সমাবেশে অংশ নেয়ার ব্যাপারে অনীহা দেখিয়ে আসছে। এ সময়ে দেশে এরশাদের অনুপস্থিতির দ্বারা জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে গেল।
Discussion
Comments are closed.